,

নবীগঞ্জে সরকারী নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে এনজিও কতৃক কিস্তি আদায়ের অভিযোগ

তৌহিদ চৌধুরী : আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত কিস্তি আদায়ে সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও নবীগঞ্জে এনজিও কর্মীরা গ্রাহকদের কাছ থেকে জোরপূর্বক কিস্তি এনজিও অভিযোগ পাওয়া গেছে। সেই সঙ্গে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে এনজিও কর্মী কর্তৃক গ্রাহক হয়রানির খবর পাওয়া গেছে।

নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জোরপূর্বক কিস্তি আদায় করলে লাইসেন্স বাতিলের নির্দেশনার তোয়াক্কা না করেও কিস্তি আদায়ে বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন এনজিও কর্মীরা। এরই মধ্যে কিস্তির টাকা আদায় নিয়ে গ্রাহকদের সঙ্গে এনজিও কর্মীদের উগ্র আচরণ ও ঝগড়া-বিবাদের ঘটনা ঘটেছে।

করোনাভাইরাসের দুর্যোগে কিস্তি আদায় মরার ওপর খাঁড়ার ঘায়ের মতো হয়ে দাঁড়িয়ে গ্রাহকদের। এ নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন ঋণগ্রহীতারা। সেই সঙ্গে কিস্তির টাকা নিয়ে দিশেহারা তারা।

৩০ জুন পর্যন্ত কাউকে ঋণখেলাপি ঘোষণা করা যাবে না উল্লেখ করে গত ২২ মার্চ এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে লাইসেন্সপ্রাপ্ত সব ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে চিঠি পাঠিয়েছে মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি (এমআরএ)।

এরপরও প্রজ্ঞাপনের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে নবীগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় ক্ষুদ্র ঋণগ্রহীতাদের কাছ থেকে কিস্তি পরিশোধে বাধ্য করা হচ্ছে। বিষয়টি স্পষ্ট করার জন্য ২৫ মার্চ আরও একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে এমআরএ।

এই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে ঋণগ্রহীতাদের আর্থিক অক্ষমতার কারণে ক্ষুদ্রঋণের কিস্তি অপরিশোধিত থাকলেও তাদের আর্থিক অবস্থা বিবেচনায় ৩০ জুন পর্যন্ত কিস্তি বা ঋণকে বকেয়া বা খেলাপি দেখানো যাবে না।

অর্থাৎ করোনার সঙ্কটে ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ঋণগ্রহীতাদের কিস্তি পরিশোধে বাধ্য করা যাবে না। তবে কোনো গ্রাহক স্বেচ্ছায় ঋণের কিস্তি পরিশোধে ইচ্ছুক হলে সেক্ষেত্রে বাধা থাকবে না।

একই সঙ্গে কোনো প্রতিষ্ঠান যদি নতুন করে কাউকে ঋণ দিতে চায় সেটা দিতে পারবে।
সরেজমিনে, নবীগঞ্জে দেখা যায় নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জ ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের সৈয়দপুর বাজারে , কিস্তি আদায়ে ব্যস্ত এনজিও কর্মীরা। বাজারটিতে এনজিওর মাঠকর্মীরা কিস্তি আর সঞ্চয়ের টাকা উত্তোলনে এফআইডি সহ অধিকাংশ এনজিও সংস্থা।

বেসরকারি এনজিও সংস্থা এফআইডি’র ঋণগ্রহীতা আগনা গ্রামের মায়া রানী দাশ বলেন, প্রতিটি এনজিওকে সরকারিভাবে জুন মাসের কিস্তি আদায় বন্ধ রাখার নির্দেশ দিলেও সেটি মানছে না এনজিও কর্তৃপক্ষ। সরকারি ছুটির মেয়াদ শেষ হওয়ার পরদিন থেকে  কিস্তি আদায়ে আসছেন এনজিও কর্মীরা।

তিনি বলেন, গতকাল এফআইডি এনজিও কর্মকর্তা বাড়িতে কিস্তি দেওয়ার জন্য হংকার দেন, প্রথমে অপরাগতা প্রকাশ করলে এক পর্যায়ের জোর পূর্ব কিস্তি  চাপ প্রয়োগ করেন। পরে এক প্রতিবেশির কাছ টাকা ধার করে কিস্তি দিতে বাধ্য হই।

ঋণ নিয়েছি পরিশোধ তো করবই। তবে এখন বৈশ্বিক মহামারি করোনা সংকটের কারণে পরিবার নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে, তার মধ্যে কিস্তি দেওয়া এ যেন মরার উপর খরার ঘা।

এছাড়া উপজেলার একাধিক ব্যাবসায়ী গ্রাহকের অভিযোগ প্রতিষ্ঠানে না পেলে মোবাইলে ফোন দেন। কিস্তি না দিলে আগামীতে ঋণ দেয়া হবে না বলেও ভয় দেখান। এনজিওর ঋণ ছাড়া ব্যবসা চালানো সম্ভব না বলে ধারদেনা করে কিস্তি দিচ্ছি আমরা। আসলে কিস্তির টাকা পরিশোধ করা নিয়ে আমরা সবাই এখন দিশেহারা।

এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন ভুক্তভোগী গ্রাহকরা


     এই বিভাগের আরো খবর